রবিবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২১, ০৯:২৮ অপরাহ্ন
আল আমিন, (রাজশাহী) তানোর থেকে :
‘শ্রমিক মালিক ঐক্য গড়ি, উন্নয়নের শপথ করি’ এই প্রত্যয় নিয়ে তানোর উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার মাধ্যমে মহান মে দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার ১লা মে ২০১৯ ইং সকাল ১১ টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা, কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক সমিতি ও ট্রাক, ট্রাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যান ইউনিয়নের সকল শ্রমিকদের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রাটি তানোর পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবারো উপজেলা চত্বরে এসে শেষ হয়।পরে এক আলোচনা সভার আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব চৌধুরী মোঃ গোলাম রাব্বীর সভাপতিত্ত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জনাব মোঃ লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না, চেয়ারম্যান তানোর উপজেলা, রাজশাহী। বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খাইরুল ইসলাম, তদন্ত ওসি মোঃ রাকিবুল হাসান, তানোর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আবু বকর সিদ্দিক।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নির্মাণ শ্রমিক নেতা মুক্তা এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ ময়েজ উদ্দিন (মিস্ত্রি), মন্ডল এন্টারপ্রাইজ এর মালিক মোঃ আকবর মন্ডল(মিস্ত্রি), তানোর থানা মোড় বনিক সমিতির সভাপতি, হামিদুর রহমান, ও ট্রাক, ট্রাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যন ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আয়েশ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম (সিরাজ), কোষাধ্যক্ষ মোঃ বাবুল হোসেন বাবু, দপ্তর সম্পাদক মোঃ এনামুল হক, সড়ক সম্পাদক মোঃ মফিজ উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আজিম উদ্দিন, ট্রাক চালক মোঃ রিপন সহ বিভিন্ন পেশার শ্রমিকবৃন্দ।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মোঃ গোলাম রাব্বী তানোর, রাজশাহী।মোঃ লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না, চেয়ারম্যান তানোর উপজেলা, মোঃ আবু বকর সিদ্দিক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তানোর, রাজশাহী সহ নির্মাণ শ্রমিক নেতা মুক্তা এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ ময়েজ উদ্দিন, মন্ডল এন্টারপ্রাইজ এর মালিক মোঃ আকবর মন্ডল। বক্তারা সবাই শ্রমিকদের অধিকার, চাহিদা ও মান উন্নয়ন নিয়ে নানা বিষয়ে আলোচনা করেন।
মহান মে দিবসে তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না তার বানীতে বলেন, মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক এবং মালিক পরস্পর সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিবেদিত হবেন বলে আমরা আশা রাখি।
শ্রমিক ভাই-বোনসহ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ।
বিশ্বের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার স্মৃতিবিজড়িত গৌরবোজ্জ্বল ত্যাগের ঐতিহাসিক দিন ১ মে উল্লেখ করে তিনি মহান মে দিবস উপলক্ষে তানোর উপজেলাসহ বাংলাদেশের মেহনতি মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
এদিকে, জাতীয় মে দিবস উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মোঃ গোলাম রাব্বী তানোর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে তার বানীতে বলেন, প্রথমেই এই মে দিবসে যারা নিজেদের দাবি আদায়ে আত্মাহুতি দেন তাদেরকে গভীর ভাবে স্বরণ করছি। আসলে আমাদের আশেপাশে নানা পেশার শ্রমিক আছে যাদের ঘাম, রক্ত পানি করা শ্রমের মূল্য আমরা দিতে পারব না, তাদের এই কষ্টের বিনিময়েই কিন্তু আমরা সমাজের উঁচু শ্রেণীর মানুষ সুখে থাকতে পারি। তাই আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের মান উন্নয়নে বিশেষ করে ক্ষুদ্র নৃ-গষ্ঠীদের নিয়ে ব্যাপক উন্নয়ন মূলক কাজ হাতে নিয়েছে, তারি ধারা বাহিকতায় প্রত্যেকটা উপজেলায় কিছু কার্যক্রম রয়েছে। আমি এই বিষয় গুলোর দিকে দৃষ্টি রাখব এবং তা সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব। আমি তানোর সহ সারা বিশ্বের সকল শ্রেণী পেশা শ্রমিকদের জানাই স্বশ্রদ্ধীয় সালাম ও ভালবাসা।
মহান মে দিবসে তানোর থানা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খাইরুল ইসলাম তার বানীতে বলেন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে মহান মে দিবস গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করছে। বর্তমান সরকার শ্রমিকদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। সরকার শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন, মালিকপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। আমরা তানোর থানা পুলিশ প্রশাসন গভীরভাবে মে দিবসে সকল শ্রমিক ও মেহনতী মানুষদের জানাই শ্রদ্ধা, সম্মান ও সালাম।
উল্লেখ্য, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বজুড়ে আজ পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণার উৎস এই দিন। মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার আর শ্রমিকদের শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটার স্বপ্ন দেখারও দিন এটি।
১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকেরা শ্রমের উপযুক্ত মূল্য এবং দৈনিক অনধিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। এতে অনেক শ্রমিক হতাহত হন। তাঁদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে দৈনিক কাজের সময় আট ঘণ্টা করার দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, এরপর থেকে দিনটি ‘মে দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
সাইবার নিউজ একাত্তর/ ১লা মে, ২০১৯ ইং/হাফিজুল
© কপিরাইট : খন্দকার মিডিয়া গ্রুপ
বাল্যবিবাহ রোধ করুন, মাদক মুক্ত সমাজ গড়ুন।