শুক্রবার, ০৫ মার্চ ২০২১, ১২:৩৬ অপরাহ্ন
ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা, স্টাফ রিপোর্টার :
বন্যার ফলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজেলার পদ্মা নদীর পানি দিন দিন বেড়েইে চলেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে পদ্মার পানি বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করেছে। গত ২ দিন পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির গতি আবারও বেড়েছে। এদিকে হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের ৩৭ গ্রামের প্রায় ১০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজেলায় প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দৌলতপুর উপজেরায় ৭’শ পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির মাষকলাইয়ের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। বিলম্বিত এ বন্যায় কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক। হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারণে বেশ দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, গত এক সপ্তাহে ধরে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। পানি ভারতে থেকে ফারাক্কা হয়ে পদ্মায় পড়ছে। এখন প্রতিদিন গড়ে ০.১২ সেন্টিমিটার করে পানি পাড়ছে। দু’দিন আগে বৃদ্ধির পরিমান ছিল প্রায় .২৪ সিন্টিমিটার। ভেড়ামারাার পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৩.৯০ সেন্টিমিটার। বিপদসীমা হল ১৪.২৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপদসীমার ০.৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহি হচ্ছিল। সরেজমিন বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আকস্মিক পদ্মা নদীতে পানি বেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। এক সপ্তাহ আগেও যেসব এলাকা শুকনা ছিল। এখন সেখানে পদ্মার পানিতে থৈই থৈই করছে। যেদিনে চোখ পড়ে শুধু পানি আর পানি। চলার রাস্তা ঘাট সব জায়গায় পানি। চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৩৭ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের বের হওয়ার কোন উপায় নাই। নৌকাই তাদের চলার একমাত্র অবলম্বন। এদিকে সোনাতলা, চিলমারী, চরচিলমারীসহ কয়েক গ্রামের প্রায় ৭ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। কয়েকটি বিদ্যালয় ছুটি দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজেলায় প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দৌলতপুরের ফিলিপনগর, মরিচা, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর এই ৪ ইউনিয়নের মাষকলাইয়ের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চরা লের মাঠগুলো গত এক সপ্তাহ আগেও যেখানে সবুজ ফসলে ভরপুর ছিল। পদ্মার আকস্মিক পানি বৃদ্ধির কারণে তলিয়ে গেছে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির মাষকলাইয়েল ক্ষেত। কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ায় তাদের প্রায় ৩০ বিঘা জমির মাষকলাই পানিতে তলিয়ে গেছে।
দৌলতপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাইদুর রহমান বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ত্রান সামগ্রী প্রস্তত রয়েছে। পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল মারুফ জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে ৩ ইউনিয়নের নিম্ম অঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে।
দৌলতপুর আসনের সাংসদ অ্যাড. সারওয়ার জাহান বাদশা বলেন, পদ্মায় হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ৪ ইউনিয়নের মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিশেষ করে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রতিনিয়ত তাদের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে সেখানে বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে মানুষ যেন দুর্ভোগে না পড়েন সে জন্য স্থায়ী রাস্তাঘাটসহ নানা উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হবে।
দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য আ, কা, ম সরওয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন ও দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. এজাজ আহমেদ মামুন বন্যা কবলিত রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়ন পরিদর্শন করে তাৎক্ষনিকভাবে ২০০ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
এলাকাবাসী সকল কে তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর আহবান করেছে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
সাইবার নিউজ একাত্তর/ ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০১৯ ইং/ আব্দুর রাজ্জাক (রাজু)
© কপিরাইট : খন্দকার মিডিয়া গ্রুপ
বাল্যবিবাহ রোধ করুন, মাদক মুক্ত সমাজ গড়ুন।